Posts

Showing posts from September, 2025

প্রথম পর্ব : নোবেল শান্তি বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশ পুনর্গঠনের স্বপ্নীল যাত্রা

Image
জুলাই বিপ্লব পরবর্তী  বাংলাদেশের  নতুন নেতৃত্ব   প্রথম পর্ব : নোবেল শান্তি  বিজয়ী  ড. মুহাম্মদ  ইউনূসের দেশ পুনর্গঠনের স্বপ্নীল যাত্রা  Reader’s Question: “বাংলাদেশের যে সংস্কারগুলো রাজনৈতিক নেতাদের করার কথা ছিল, তা যখন তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে তখন ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস  যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন সে ক্ষেত্রে তিনি সফল হবেন বলে আপনি মনে করেন? " "আপনি কি মনে করেন, ড. ইউনূসের অর্জনগুলোকে আমরা দেশের নীতি–কৌশলে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি?" "বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম শেষে  তিনি কে বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন সফল রাষ্ট্র সংস্কারক হিসেবে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবেন? " ভূমিকা  বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যেন এক অন্তহীন বৃত্ত—সংঘাত, প্রতিহিংসা, দুর্নীতি আর দলীয় আধিপত্যে ভরপুর। স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু নাগরিক জীবনের মৌলিক কাঠামোতে সেই প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি। জনগণের আস্থা হারিয়েছে রাজনীতি, ভেঙে পড়েছে গণতান্ত্রিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান। এই প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে একটি ভিন্ন নাম—ডঃ মুহাম্মদ ইউনূ...

চতুর্থ পর্ব : দেশে দেশে পি আর পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক

"গণতন্ত্রের ধারা : পি আর পদ্ধতির বিশ্লেষণ " [চতুর্থ পর্ব  : দেশে দেশে পি আর পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক ] পাঠকের প্রশ্ন পি আর পদ্ধতি সব দেশে সফল হয়েছে কি? কোথায় এ পদ্ধতি  নিয়ে  বিতর্ক  হয়েছে? ভূমিকা পি আর পদ্ধতি হলো সকলের  মতামতের প্রতিফলনের  জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা। তবে ইতিহাস দেখিয়েছে, প্রতিটি দেশেই এই পদ্ধতির  সফলতা সমান নয়। কোন কোন দেশে দেশে এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে  , জোট সরকার নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি  হয়েছে এবং  বড় দলের উপরে  ছোট দলের আধিপত্য সৃষ্টি করেছে। এখানে উদাহরণ হিসেবে  ইসরাইল, ইতালি এবং শ্রীলঙ্কার কথা বলা যায়।  ইসরাইল: ছোট দলের আধিপত্য ও জোট সরকারের চ্যালেঞ্জ ইসরাইলে পুরো দেশকে একটি আসন হিসেবে গন্য করা হয় এবং  প্রতিটি রাজনৈতিক দল যে ভোট পায়, সে অনুপাতে সংসদে আসন নির্ধারিত হয়। যার ফলে সংসদে অনেক ছোট দল প্রবেশ করে।ছোট দলগুলো তখন বড় দল গুলোর সাথে দর কষাকষিতে লিপ্ত হয়  এবং প্রায়ই সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থার তথা  সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়।...

ষষ্ঠ পর্ব: ৯০ এর গণআন্দোলন পরবর্তী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার সফলতা ও ব্যর্থতা (১৯৯১–২০০৮)

Image
  বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়া  বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এক অদ্ভুত কাব্য। এতে যেমন রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আশা–আকাঙ্ক্ষা আছে, তেমনি আছে হতাশার অন্ধকার, ষড়যন্ত্রের ছায়া ও বিভাজনের ক্ষতচিহ্ন। স্বাধীনতার দুই দশক পেরিয়ে, ১৯৯০-এর শেষপ্রান্তে যখন জনগণ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে জেগে উঠল, তখন সবার কণ্ঠেই ধ্বনিত হচ্ছিল—“গণতন্ত্র চাই, ভোটাধিকার চাই, ন্যায় চাই।” এরশাদ পতন ও তিন দলের ঐক্য    ৬ ডিসেম্বর , ১৯৯০  কনকনে শীত —ঢাকার রাজপথ যেন জনসমুদ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকে গ্রামবাংলার মাটিও কেঁপে উঠেছিল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ প্রধান দলগুলো ইতিহাসের প্রয়োজনে প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হলো। সামরিক শাসকের পতন ঘটিয়ে দেশকে আবার বেসামরিক গণতন্ত্রের পথে আনার জন্য এ ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরশাদের পতন শুধু একজন শাসকের বিদায় ছিল না—এ ছিল দীর্ঘদিনের দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জয়োল্লাস।  তিন দলের মনোনীত প্রার্থী  প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে অস্থায়ী সরকারের প্রধান করে  নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে উপদেষ্ট...

পঞ্চম পর্ব: স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ

Image
সংসদে ভাষণ দানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭২ রাষ্ট্রগঠন ও সংবিধান ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন  রাষ্ট্রের জন্ম হলো—বাংলাদেশ। কিন্তু  বিজয়ের সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসলো  হাজারো জটিল প্রশ্ন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের   রাষ্ট্রের কাঠামো কেমন হবে ? কেমন হবে প্রশাসন, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা? কীভাবে পুনর্বাসন করা হবে এক কোটি শরণার্থী ও অগণিত যুদ্ধাহত মানুষকে? জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসে এই বিশাল চ্যালেঞ্জের দায়িত্ব কাঁধে নিলেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন—রাষ্ট্রকে দাঁড় করাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন একটি  সংবিধান, যেখানে স্বাধীনতার চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকবে। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে গঠিত হলো সংবিধান প্রণয়ন কমিটি। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে মাত্র ১১ মাসের মধ্যেই প্রণীত হলো বাংলাদেশের সংবিধান। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে গৃহীত  হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয় ।এই সংবিধানকে আজও গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীলতার অন্যতম সেরা দলিল যা ম্যাগনাকার্টা নামে  গণ্য করা হয়। জাতীয়তাবাদ, গণতন্...

চতুর্থ পর্ব: স্বাধীনতা আন্দোলন

Image
জনসভায় ভাষণ দানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  ভূমিকা বাংলার ইতিহাস যেন বহতা নদীর স্রোতের মতো—কখনো শান্ত, কখনো উত্তাল, আবার কখনো ভাঙাগড়ার খেলায় মেতে ওঠা নতুন দিগন্তের মতো। এই ভূখণ্ডের মানুষ বারবার বঞ্চিত হয়েছে, শোষিত হয়েছে, আর সেই বঞ্চনা থেকেই তাদের ভেতরে জন্ম নিয়েছে এক অগ্নিশিখা—স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের  সংগ্রাম, অধিকার আদায়ের লড়াই, আর স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণের অবিচল অগ্রযাত্রা। ১৯০৫ বঙ্গভঙ্গ ও আন্দোলন: বিভক্তির আগুনে ঐক্যের জন্ম ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর, লর্ড কার্জন বাংলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করার ঘোষণা দেন—পূর্ববঙ্গ ও আসাম একটি প্রদেশ, আর পশ্চিমবঙ্গ আলাদা প্রদেশ। মুখে বলা হয়েছিল প্রশাসনিক সুবিধার জন্য, কিন্তু আসল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন—বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনা দমন করা। কিন্তু ব্রিটিশরা ভেবেছিল এক, হয়েছে আরেক। বিভক্ত বাংলার মাটিতে আন্দোলনের আগুন জ্বলে উঠল। কলকাতার রাস্তায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের আড্ডায়, মফস্বলের চায়ের দোকানে—সর্বত্র উচ্চারিত হতে লাগল প্রতিবাদের ঝড় । ‘স্ব...

তৃতীয় পর্ব: ঔপনিবেশিক শাসনকাল

Image
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব, সিরাজউদ্দৌলা  বাংলার ইতিহাসে ঔপনিবেশিক শাসনকাল এক দীর্ঘ দুঃখ-দুর্দশায় গাঁথা, আবার একই সঙ্গে নতুন বোধোদয়ের সূচনা। বিদেশি শাসকগোষ্ঠীর আগমন যেমন এ ভূখণ্ডের লোকজন কে শোষণ ও দমননীতির শিকার হতে হয়েছিল, তেমনি তাদের উপস্থিতি শিক্ষাব্যবস্থা, সমাজসংস্কার ও রাজনৈতিক চেতনায় নতুন অধ্যায়ও উন্মোচিত করেছিল। এখানে আমরা বাংলার মানুষ কেমন করে পর্তুগিজ, ডাচ, ফরাসি ও সর্বশেষ ব্রিটিশ শাসকদের দ্বারা শোষিত হয়েছিল য়েছিল ,কেমন করে তারা অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নেমেছিল এবং কেমন করে এইসব ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে বাংলায়  আধুনিক চিন্তার দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ রযেছে। বিদেশি আগমন ও বাণিজ্যের সূত্রপাত ১৬শ শতাব্দীর দিকে বঙ্গোপসাগরের নীল জলপথে ঘরে বাংলায় আগমন ঘটে নতুন অতিথির। আরব, চীন ও মধ্য এশিয়ার বণিকেরা বহু আগেই বাংলার সঙ্গে বাণিজ্য করলেও, এই সময়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলোর আগমন  বাংলার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত ঘটায় । প্রথমে আসে পর্তুগিজরা। তারা চট্টগ্রাম, হুগলি ও ষাটগাঁও বন্দরকে কেন্দ্র করে মসলা, তুলা, চামড়া, চাল ও নীল রপ্তানি করত। যদিও তারা  প্রথমে ...

দ্বিতীয় পর্ব: প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস

Image
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার     ভূমিকা বাংলার ইতিহাস যেন এক দীর্ঘ নদীযাত্রা। কখনো এর স্রোত শান্ত ও স্নিগ্ধ, আবার কখনো তা হয়েছে তীব্র ও প্রলয়ঙ্কর। এই দীর্ঘ যাত্রায় প্রাচীন জনপদ থেকে শুরু করে আর্যদের আগমন, মौर্য ও গুপ্ত প্রভাব, পাল ও সেনদের উত্থান, সুলতানি শক্তির আবির্ভাব এবং অবশেষে মুঘল আমলে বাংলার পরিণতি—সবই যেন ইতিহাসের বিশাল ক্যানভাসে অঙ্কিত বর্ণিল চিত্রকর্ম। বাংলার জনপদ, ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি প্রতিটি ধাপে নতুন রূপে সেজেছে, গড়ে তুলেছে নিজস্ব ঐতিহ্যের ভান্ডার। প্রাচীন জনপদ ও আর্য প্রভাব ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই বাংলার ভূখণ্ডে সভ্যতার স্ফুরণ ঘটে। গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র–মেঘনা নদীবিধৌত সমভূমি কৃষির জন্য ছিল অদ্বিতীয়। নব্য প্রস্তর যুগের নিদর্শন থেকে স্পষ্ট হয়, এখানে গড়ে উঠেছিল বসতি ও কৃষিভিত্তিক সমাজ। ধীরে ধীরে এ ভূমি হয়ে ওঠে নানা জনপদের আবাসভূমি—অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুণ্ড্র, সমতট প্রভৃতি। আর্যদের আগমন এই জনপদগুলোকে নতুন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ধাঁচে রূপ দেয়। সংস্কৃত ভাষা ও বেদীয় ধর্মের প্রভাবে সমাজে বর্ণব্যবস্থার বিস্তার ঘটে। তবে আর্য প্রভাব বাংলায় কখনো এককভাবে শেকড় ...

প্রথম পর্ব: বাংলাদেশের পরিচিতি

Image
 মানচিত্রে  বাংলাদেশ বাংলাদেশের নামকরণ ও জন্ম বাংলাদেশ—এই নামটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক ইতিহাস, এক সংগ্রাম এবং এক আত্মপরিচয়ের ঘোষণা। “বাংলা” শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে নানা মত। কেউ বলেন, এটি এসেছে প্রাচীন ‘বঙ্গ’ শব্দ থেকে; আবার কেউ মনে করেন ‘বঙ্গাল’ শব্দ থেকেই এর সূত্রপাত। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এই ভূখণ্ড একাধিক নামে পরিচিত ছিল—বঙ্গ, গৌড়, সুবর্ণগ্রাম, বঙ্গাল কিংবা পূর্ববঙ্গ। প্রতিটি নামই একটি বিশেষ সময়, বিশেষ ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন বহন করে। তবে দীর্ঘকালীন ঐতিহাসিক পথচলা শেষে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিপরীক্ষার পর জন্ম নেয় স্বাধীন রাষ্ট্র—বাংলাদেশ। এই নামটি আর শুধু একটি ভৌগোলিক পরিচয় নয়; এটি মুক্তির অঙ্গীকার, আত্মত্যাগের ফসল এবং ইতিহাসের রক্তাক্ত অথচ গৌরবময় এক অধ্যায়। বাংলাদেশের জন্ম সহজ কোনো ইতিহাস নয়। ভাষা আন্দোলনের রক্ত, রাজনৈতিক সংগ্রাম, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অদম্য সাহস—সবকিছু মিলেই এই রাষ্ট্রের জন্মভূমি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থার বৈষম্য, অর্থনৈতিক শোষণ ও সাংস্কৃতিক দমননীতি বাংলার মানুষের অন্তরে জমে থাকা বিক্ষোভকে জাগিয়ে তোলে। ...

দ্বিতীয় পর্ব : শ্রীলঙ্কার : স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে গৃহযুদ্ধ পেরিয়ে শান্তিময় এক দেশ

Image
              ডন স্টিফেন সেনানায়েকে (১৮৮৪---১৯৫২), শ্রীলংকার জাতির জনক              ভূমিকা শ্রীলঙ্কা—ভারত মহাসাগরের বুকে মুক্তার মতো ভেসে থাকা এক দ্বীপদেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশটিকে অনেকে বলে থাকেন Indian Ocean’s Pearl। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ইতিহাস শুধুই প্রকৃতির রূপকথা নয়, বরং সংগ্রাম, ত্যাগ, রক্তক্ষয় আর গণতন্ত্রের দীর্ঘ যাত্রার এক জটিল কাহিনি। ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল ভাঙার জন্য যেমন এর মানুষ প্রাণ দিয়েছে, তেমনি স্বাধীনতার পর গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতেও লড়তে হয়েছে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। কখনও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, কখনও জাতিগত বৈষম্য, আবার কখনও দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ—সবকিছুর ভেতর দিয়েই শ্রীলঙ্কা আজ প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের পথে ফিরে এসেছে। ঔপনিবেশিক শ্রীলঙ্কা: শৃঙ্খলের ভেতরে জাতীয় চেতনার উত্থান শ্রীলঙ্কার অতীত ইতিহাস ঔপনিবেশিক শাসনের গভীর ক্ষতচিহ্নে ভরা। প্রথমে পর্তুগিজরা এ দ্বীপে প্রবেশ করে, পরে ডাচরা দখল করে, আর শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা ১৯শ শতকের শুরুতে পুরো দ্বীপটিকে তাদের অধীনে নেয়। ব্রিটিশরা দ্বীপটির নাম রাখে Ceylon এবং...

প্রথম পর্ব : শ্রীলংকা: ভারত মহাসাগরের মুক্তো

Image
 মানচিএে শ্রীলঙ্কা  ভারত মহাসাগরের নীল জলে ভেসে থাকা শ্রীলংকা এক অপূর্ব দ্বীপদেশ। আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও তার ঐতিহাসিক ঐশ্বর্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৌদ্ধ সংস্কৃতির দীপ্তি এবং সমুদ্রতীরবর্তী জনজীবনের রঙিন চিত্র তাকে বিশ্বমঞ্চে এক অনন্য মর্যাদা দিয়েছে। সিংহলীদের ভাষায় এই দ্বীপকে বলা হয় “লঙ্কা”—অর্থাৎ উজ্জ্বল ভূমি। সমুদ্রঘেরা এই দেশটির প্রতিটি ইঞ্চি যেন প্রকৃতির হাতে আঁকা এক সোনালি চিত্রকলা। ভূমিরূপ শ্রীলংকা দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা ভারতবর্ষের দক্ষিণে অবস্থিত। ছোট্ট পক প্রণালী এবং মন্নার উপসাগর দ্বারা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। দ্বীপটির মোট আয়তন প্রায় ৬৫,০০০ বর্গকিলোমিটার। ভূমিরূপকে মোটামুটি তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়— ১. উচ্চভূমি ও পর্বত অঞ্চল: মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত পাহাড় ও মালভূমি। এখানে পাইডুরুতালাগালা (২,৫২৪ মিটার) শ্রীলংকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ২. নিম্নভূমি সমভূমি: দ্বীপের চারপাশে বিস্তৃত, উর্বর কৃষিজমি ও নদীবাহিত সমতলভূমি। ৩. সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল: প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলরেখা, যেখানে রয়েছে সোনালি বালুর সৈকত, নারিকেল গ...