Posts

Showing posts with the label গণতন্ত্র

বি জে হাবিবি এবং ইন্দোনেশিয়ায় গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম

Image
বি জে হাবিবি "কখনও কখনও ইতিহাস এমন এক দরজা খোলে, যেখান দিয়ে জাতি প্রবেশ করে অন্ধকার থেকে আলোয়। ১৯৯৮ সালের ইন্দোনেশিয়া ছিল সেই মুহূর্তের সাক্ষী। সুহার্তোর দীর্ঘ তিন দশকের শাসন ভেঙে পড়ল, আর নেতৃত্বের ভার এসে পড়ল এমন একজন মানুষের হাতে, যিনি ছিলেন প্রকৌশলী, স্বপ্নদ্রষ্টা এবং অপ্রস্তুত—কিন্তু ইতিহাস তাঁকে বেছে নিয়েছিল। তিনি ছিলেন বি. জে. হাবিবি, যিনি স্বল্প সময়ে হলেও ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রের স্থপতি হয়ে ওঠেন। ১. স্বৈরশাসনের দীর্ঘ ছায়া: সুহার্তো ও “নতুন শাসন ব্যবস্থা” ১৯৬৭ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতির ওপর দাপট দেখিয়েছিলেন সুহার্তো। তাঁর শাসন ছিল “নিউ অর্ডার”—একটি সামরিক ও আমলাতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, যেখানে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল সীমিত, গণমাধ্যম ছিল রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে, আর রাজনৈতিক দলগুলো কার্যত “Golkar”-এর ছায়াতলে আবদ্ধ। তবে সুহার্তো শুধু রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণেই থেমে থাকেননি। তিনি অর্থনীতিকে আমলাতান্ত্রিক ও সামরিক পৃষ্ঠপোষকতার কাঠামোয় বেঁধে ফেলেছিলেন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সম্পদের বৈষম্য সমাজে গভীর ক্ষোভ তৈরি করেছিল। ১৯৯৭ সালের এশিয়ান অর্থনৈতিক সংকট সেই ক্ষোভকে আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। মুদ্রা...

বিশ্বে গণতান্ত্রিক মনোনয়ন মডেল – প্রাইমারি নির্বাচন

 পর্ব ২:  ভূমিকা গণতন্ত্রের প্রাণ হলো জনগণের অংশগ্রহণ। কিন্তু শুধুমাত্র সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়া নয়, বরং দলের প্রার্থী নির্ধারণের ক্ষেত্রেও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। এজন্য প্রাইমারি নির্বাচন (Primary Election) মডেল বিশ্বের অনেক উন্নত গণতন্ত্রে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এটি একটি প্রক্রিয়া যেখানে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয় সরাসরি দলের নিবন্ধিত সদস্য বা ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়া দলীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং প্রার্থীর জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সবচেয়ে স্বচ্ছ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশে এখনো প্রাইমারি নির্বাচন প্রচলিত নয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স এবং আরও অনেক দেশ সফলভাবে এটি ব্যবহার করছে। আজকের আলোচনায় আমরা বিশ্বে প্রাইমারি নির্বাচন মডেল এবং এর কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করব। প্রাইমারি নির্বাচনের মূল ধারণা প্রাইমারি নির্বাচন মূলত দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের একটি পদ্ধতি। এখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চেয়ে সদস্য ও ভোটারদের মতামত প্রাধান্য পায়। প্রার্থীরা সাধারণ জনগণ বা দলীয় ভোটারদের সামনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক...

স্বৈরশাসনের ছায়া থেকে গণতন্ত্রের পথে: বাংলাদেশ ও বিশ্ব

📘 পর্ব ১: স্বৈরশাসকের পতনের পরে রাষ্ট্র পুনর্গঠন: বাংলাদেশ কেন বার বার  হোঁচট খায়? “একজন শাসকের পতনই কি যথেষ্ট? নাকি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র বিনির্মিত হয়  জনগণের সম্মিলিত সংগ্রামে?” 🟦 পাঠকের প্রশ্ন: একজন স্বৈরাচারের বিদায় হলে  কি একটি জাতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুক্ত হয়ে যায়? নাকি সত্যিকারের মুক্তির জন্য প্রয়োজন হয় আরও গভীর সংস্কার ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস? ১. ভূমিকা: শাসক নয়, শাসনের ধরনই আসল চ্যালেঞ্জ স্বৈরাচার পতনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভ্রান্তি হল—মানুষ ধরে নেয়, শাসক চলে গেলে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, শাসক নয়, ব্যবস্থাটাই যদি অক্ষত থাকে, তাহলে শুধু মুখ বদলায়, দুঃশাসনের চেহারা বদলায় না। বাংলাদেশ বারবার সেই একই আবর্তে আটকে পড়ে—শাসক বদলায়, কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থা ও রাজনীতির চরিত্র বদলায় না। ২. স্বৈরতন্ত্র: সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য স্বৈরতন্ত্র কোনো সাধারণ রাজনৈতিক মত নয়—এটি ব্যক্তিপূজার, ক্ষমতাকেন্দ্রিকতা ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের শাসনপ্রণালী। স্বৈরশাসক নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে: বিচারব্যবস্থাকে করায়ত্ত করে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে ব্যক্তিগত অস্ত্র বানায় গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে নির...

জুলাই ঘোষণাপত্র: একটি জাতির সংকল্প ও বৈশ্বিক অনুরণন

পর্ব : ২   জুলাই ঘোষণাপত্র ও গণতন্ত্রের পথরেখা: বাস্তবায়ন, প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা “একটি দলিল শুধু কাগজে লেখা কিছু  অক্ষর নয়, বরং একটি জাতির লিখিত ইতিহাস । কিন্তু এই অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হবে কিভাবে?” ২০২৪ সালের জুলাই ঘোষণাপত্রের ঘোষণার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এই পর্বে আমরা বিশ্লেষণ করব ঘোষণার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক ও জনগণের প্রতিক্রিয়া, এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কীভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও অগ্রগতি জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ ছিল না। রাজনৈতিক বিভাজন, প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা ও মতবিরোধ প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যেমন নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদার করা, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনতা প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম সরকারকে নজরদারি করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। অনেক নাগরিক উদ্যোগ ও সংগঠন নির্বাচনের স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছে। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কিছু  রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘোষণাটিকে “রা...

জুলাই ঘোষণাপত্র: একটি জাতির সংকল্প ও বৈশ্বিক অনুরণন

 পর্ব: ১  “যখন একটি জাতি নিঃশব্দে ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন তার হৃদয় কথা বলে—ঘোষণার মাধ্যমে, জেগে ওঠার মাধ্যমে। জুলাই ২০২৪-এর ঘোষণা কি আমাদের সেই জাতিগত জাগরণ?” ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে একটি ঐতিহাসিক দলিল—‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। এটি শুধু একটি বিবৃতি নয়, বরং একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যা দেশের জনগণের অন্তর্নিহিত চেতনার প্রতিফলন। এই পর্বে আমরা জানব, কেন এই ঘোষণাটি জরুরি ছিল, এর পটভূমি কী, এবং এটি কিভাবে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি বহন করে। সূচনা:  বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এক সংকটময় অধ্যায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা থেকে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে অনেক বাঁধা পেরিয়েছে। নানা সময়ে নির্বাচন, সরকারের পরিবর্তন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অনিয়মের কারণে দেশের গণতন্ত্র অস্থিতিশীল অবস্থায় পড়ে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অবিশ্বাস ও হতাশার বাতাস বইতে থাকে। সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার এবং মৌলিক অধিকার রক্ষায় একপ্রকার হতাশ। এমন প্রেক্ষাপটে, জুলাই ২০২৪ সালে একটি দলিল ঘোষণা করা হয়, যা নানা সামাজি...

বাংলাদেশের বর্তমান মনোনয়ন পদ্ধতি – সমস্যা ও বিতর্ক

পর্ব ১ ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনীতিতে মনোনয়ন পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক আজ নতুন নয়। দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো দলীয় মনোনয়ন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই মনোনয়ন কতটা গণতান্ত্রিক? দলের নীতিনির্ধারকরা যে প্রার্থী নির্বাচন করেন, তা কতটা জনগণের প্রকৃত পছন্দকে প্রতিফলিত করে? অনেকের মতে, বর্তমান মনোনয়ন পদ্ধতিতে দলীয় প্রভাব, অর্থবিত্ত এবং ব্যক্তিগত আনুগত্যের ভূমিকা এতটাই প্রবল যে জনগণের আসল প্রতিনিধি নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের বর্তমান মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং এর মূল সমস্যাগুলো আলোচনা করব। বাংলাদেশের বর্তমান মনোনয়ন প্রক্রিয়া বাংলাদেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোতে সাধারণত প্রার্থী বাছাইয়ের পুরো ক্ষমতা থাকে দলীয় উচ্চপর্যায়ের হাতে। ক্ষমতাসীন বা প্রধান বিরোধী দল—উভয়ের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, মনোনয়ন চূড়ান্ত হয় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে। স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় কর্মীদের মতামত থাকলেও তা খুব কমই প্রভাব ফেলে। বর্তমান প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য: 1. কেন্দ্রভিত্তিক সিদ্ধান্ত: দলীয় সভানেত্রী বা সভাপতি প্রায় এককভাবে প্রার্থী মনোনীত করেন। 2. অর্থবল ও প্রভ...

স্পেশাল পর্ব: পিআর বনাম না ভোট – গণতন্ত্রে ভোটারের শেষ কথা”

🔷 শেষ  পর্ন 🔵 সাবটাইটেল: পিআর ভোটকে মর্যাদা দেয়, না ভোট ভোটারের মনের প্রতিবাদকে মর্যাদা দেয়। বাংলাদেশ যদি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালু করে, তাহলে কি না ভোটের দরকার থাকবে? কোন দেশে কীভাবে এটি বাস্তবায়িত হয়েছে, আর আমাদের জন্য এর শিক্ষাই বা কী? মূল লেখা ১. না ভোটের জন্মকথা: কেন দরকার হলো? ভোট মানেই পছন্দের প্রার্থী বা দলকে বেছে নেওয়া—এই ধারণা ছিল প্রচলিত। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, অনেক সময় ভোটার প্রার্থী বা দল কারও প্রতিই আস্থা রাখতে পারে না। তখন ভোটারদের সামনে থাকত দুটি অপশন: ভোট না দেওয়া অথবা না চাইলেও কাউকে বেছে নেওয়া এই অসন্তোষ প্রকাশের জন্য অনেক দেশে শুরু হলো “না ভোট” (NOTA – None of the Above) ব্যবস্থা। এর মূল লক্ষ্য: ভোটারকে প্রতিবাদের সাংবিধানিক অধিকার দেওয়া। 📌 ভারতীয় উদাহরণ: ২০১৩ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে ইভিএমে NOTA বোতাম যোগ করা হয়। আদালত বলেছিল: “না ভোটের অধিকার গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য, যাতে ভোটাররা স্বচ্ছভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারে।” 📌 যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা: সেখানে অফিসিয়ালি ব্যালটে লেখা থাকে “None of These Candidates”, যা অনেক ভোটার ব্যবহার করেন। 📌 ...

ভবিষ্যতের পিআর বাংলাদেশ: ২০৩০ সালের স্বপ্ন ও বাস্তবতা”

 🔷 পর্ব ১২:  🔵 সাবটাইটেল: একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রকৃত রূপ বোঝা যায়, সেখানে কারা কথা বলতে পারে, কে শুনে, আর কে সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখে। যদি বাংলাদেশ পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি চালু করে, তাহলে ২০৩০ সালে আমাদের রাজনীতি, সমাজ ও গণতন্ত্র কেমন হবে? এই পর্বে আমরা তুলে ধরবো একটি কল্পিত কিন্তু বাস্তবসম্ভব ভবিষ্যৎ। 🔶 ১. ২০৩০ সালে একটি নির্বাচনের দৃশ্য 📌 ২০৩০ সালের সংসদ নির্বাচন। ভোটার রাফিয়া একজন তরুণী। তিনি শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, বরং একটি দলকে ভোট দিচ্ছেন, যাদের তালিকায় নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী এবং তরুণ প্রার্থীও রয়েছে। ✅ নতুন রীতি: বড় দলগুলো এখন তালিকা তৈরি করে ভারসাম্য রেখে জনগণ জানে, তাদের প্রতিটি ভোট সংসদে গিয়ে প্রতিফলিত হবে হেরে গেলেও কণ্ঠ হারায় না কেউ 🔶 ২. সংসদে বৈচিত্র্যের উল্লাস 📌 নির্বাচনের পর সংসদে যাঁরা বসেছেন, তাঁদের মধ্যে শুধু পেশাদার রাজনীতিবিদ নয়—একজন মাদ্রাসা শিক্ষক, একজন সাঁওতাল নেত্রী, একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, একজন ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টিভিস্ট। ✅ কারণ: দলগুলো তাদের তালিকায় নানা পেশা, শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করেছে রা...

মিডিয়া, নাগরিক সমাজ ও সংস্কার জোট: গণতান্ত্রিক সংস্কারে সমন্বিত ভূমিকা”

 🔷 পর্ব ১১: 🔵 সাবটাইটেল: গণতান্ত্রিক সংস্কার শুধু রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয় নয়—এটি একটি সমষ্টিগত উদ্যোগ। মিডিয়া, নাগরিক সমাজ ও শিক্ষিত শ্রেণির সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া পিআর (Proportional Representation) বাস্তবায়ন সফল হতে পারে না। এই পর্বে বিশ্লেষণ করবো, এদের ভূমিকা কী, চ্যালেঞ্জ কোথায়, এবং করণীয় কী হতে পারে। 🔶 ১. মিডিয়ার ভূমিকা: তথ্য, ব্যাখ্যা ও প্রচারণা মিডিয়া হচ্ছে গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রথম আলোচক। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে মিডিয়া কতটা দায়িত্বশীল? ✅ করণীয়: পিআর নিয়ে সাধারণ ভাষায় ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন টক শো, ইনফোগ্রাফিক্স ও সামাজিক মিডিয়ায় বিশ্লেষণ রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য বিশ্লেষণ ও খণ্ডন 📌 উদাহরণ: নিউজিল্যান্ডে রেফারেন্ডামের আগে টেলিভিশন প্রচারণা ছিল পিআর বোঝানোর মূল মাধ্যম। 🔶 ২. নাগরিক সমাজ: তৃণমূল থেকে চিন্তার উদ্ভব সুশীল সমাজ ও এনজিওগুলো সমাজের 'সচেতনতা সেতু'। তাদের কাজ শুধু মানবাধিকার বা দারিদ্র্য নিরসন নয়—বরং নীতি নির্ধারণে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও তাদের ভূমিকা। ✅ করণীয়: তৃণমূলে ভোট সংস্কার বিষয়ে সচেতনতা কর্মশালা নাগরিক মতামত গ্রহণ ও দলগুলোতে...

তরুণদের ভূমিকা, শিক্ষা ও সচেতনতা—ভবিষ্যতের জন্য পিআর সংস্কৃতি গড়ে তোলা”

 🔷 পর্ব ৬:  🔵 সাবটাইটেল: গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে কেবল আইন নয়, প্রয়োজন সচেতন নাগরিক ও শিক্ষিত প্রজন্ম। এ পর্বে আমরা বিশ্লেষণ করবো, কীভাবে তরুণ, শিক্ষাব্যবস্থা ও সামাজিক উদ্যোগগুলো বাংলাদেশে পিআর (Proportional Representation) ভিত্তিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দীর্ঘমেয়াদে গড়ে তুলতে পারে। --- 🔶 ১. তরুণরাই ভবিষ্যৎ ভোটার, নেতাও বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশ তরুণ। এদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণ বদলে দিতে পারে রাজনৈতিক ধারা। ✅ তরুণদের করণীয়: ভোটাধিকারের গুরুত্ব বোঝা প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতির দাবি তোলা সোশ্যাল মিডিয়া ও ক্যাম্পাসে সচেতনতা ছড়ানো 📌 উদাহরণ: চিলিতে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচনী সংস্কারের জন্য জাতীয় বিতর্ক শুরু হয়, যা পরে সংবিধান পরিবর্তনে সহায়ক হয়। --- 🔶 ২. শিক্ষাব্যবস্থায় গণতন্ত্র ও প্রতিনিধিত্ব বিষয়ক পাঠ বর্তমান পাঠ্যক্রমে ভোটাধিকার নিয়ে কিছু আলোচনা থাকলেও পিআর বা প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থার গুরুত্ব যথেষ্টভাবে নেই। ✅ প্রস্তাব: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ‘নাগরিক শিক্ষা’ বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা বাস্তব উদাহরণসহ পিআর ও FPTP তুলনামূলক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা কলেজ/বিশ্ববিদ্য...

গণতন্ত্রের আয়নায় পিআর সিস্টেম: বাংলাদেশে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা”

🌍পর্ব ২ 🔵 সাবটাইটেল: পিআর সিস্টেম নিয়ে অনেকেই আগ্রহী, কিন্তু এটি বাস্তবায়ন সহজ নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো, আইন, ও সামাজিক বাস্তবতা কেমন—এই লেখায় আমরা বিশ্লেষণ করবো, পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব, কী বাধা আছে, এবং কোন পথে এগোতে পারি। 🌎গণতন্ত্রের আয়নায় পিআর সিস্টেম: বাংলাদেশে বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা 🔶 ১. বর্তমান ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা বর্তমানে বাংলাদেশে 'ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট' (FPTP) পদ্ধতি চালু আছে। এই পদ্ধতিতে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পায়, সে-ই জেতে—even if it’s only by 1 vote. এতে অনেক সময় ভোটের বড় অংশ 'অপ্রতিফলিত' থাকে। একটি উদাহরণ: এক আসনে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। বিজয়ী পেল ৩১% ভোট। বাকি ৬৯% ভোট অন্যদের পড়লো—তবে তারা সংসদে আসলো না। এর ফলে ঘটে: বহু ভোটের অপচয় ছোট ও নতুন দলের অনুপস্থিতি ভোটারদের আস্থা হ্রাস --- 🔶 ২. পিআর সিস্টেম বাস্তবায়নের পথে প্রধান চ্যালেঞ্জ কী? ✅ (ক) সংবিধান ও আইনগত বাধা: বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৫(২) ধারা অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ ভোটে একজন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। পিআর সিস্টেম চালু করতে হলে এই ধারা সংশোধন করতে হবে। এটি একটি সাংবি...