দ্বিতীয় পর্ব : শ্রীলঙ্কার : স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে গৃহযুদ্ধ পেরিয়ে শান্তিময় এক দেশ
ভূমিকা
শ্রীলঙ্কা—ভারত মহাসাগরের বুকে মুক্তার মতো ভেসে থাকা এক দ্বীপদেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশটিকে অনেকে বলে থাকেন Indian Ocean’s Pearl। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ইতিহাস শুধুই প্রকৃতির রূপকথা নয়, বরং সংগ্রাম, ত্যাগ, রক্তক্ষয় আর গণতন্ত্রের দীর্ঘ যাত্রার এক জটিল কাহিনি। ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল ভাঙার জন্য যেমন এর মানুষ প্রাণ দিয়েছে, তেমনি স্বাধীনতার পর গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতেও লড়তে হয়েছে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। কখনও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, কখনও জাতিগত বৈষম্য, আবার কখনও দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ—সবকিছুর ভেতর দিয়েই শ্রীলঙ্কা আজ প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের পথে ফিরে এসেছে।
ঔপনিবেশিক শ্রীলঙ্কা: শৃঙ্খলের ভেতরে জাতীয় চেতনার উত্থান
শ্রীলঙ্কার অতীত ইতিহাস ঔপনিবেশিক শাসনের গভীর ক্ষতচিহ্নে ভরা। প্রথমে পর্তুগিজরা এ দ্বীপে প্রবেশ করে, পরে ডাচরা দখল করে, আর শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা ১৯শ শতকের শুরুতে পুরো দ্বীপটিকে তাদের অধীনে নেয়। ব্রিটিশরা দ্বীপটির নাম রাখে Ceylon এবং এখানেই শুরু হয় দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস।
ব্রিটিশ শাসনে কফি, চা ও রাবার চাষের জন্য শ্রীলঙ্কা ছিল গুরুত্বপূর্ণ উপনিবেশ। এ জন্য দক্ষিণ ভারতের তামিল জনগোষ্ঠীকে শ্রমিক হিসেবে আনা হয়েছিল। একদিকে অর্থনৈতিক শোষণ, অন্যদিকে জাতিগত বিভাজন—এই দুইয়ে দেশটিতে জাতীয়তাবাদের বীজ বপন হয়।
১৯শ শতকে বৌদ্ধ পুনর্জাগরণের অন্যতম নায়ক অনাগরিক ধম্মপাল তরুণ সমাজকে জাগ্রত করতে শুরু করেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক চেতনা গড়ে তোলেন। পরে আইনজীবী ও সমাজনেতা পন্নাম্বালাম রামানাথন রাজনৈতিক অধিকারের দাবি উত্থাপন করেন। এভাবেই শ্রীলঙ্কার মানুষ বুঝতে শুরু করে—স্বাধীনতা ছাড়া কোনো জাতির মর্যাদা নেই।
স্বাধীনতার পথে শ্রীলঙ্কা
২০শ শতকের শুরুতেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন শুরু হয়। ১৯১৯ সালে গঠিত হয় Ceylon National Congress (CNC), যা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের আদলে কাজ করে। এই সংগঠনের নেতারা ধীরে ধীরে প্রশাসনে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ বাড়ানোর দাবি তোলে।
বিশেষ করে ডন স্টিফেন সেনানায়েকে (D. S. Senanayake) ছিলেন শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার প্রধান স্থপতি। কৃষক সমাজের উন্নয়ন, স্থানীয়দের অধিকার রক্ষা এবং ধৈর্যশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে তিনি জনসমর্থন অর্জন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা দুর্বল হয়ে পড়লে স্বাধীনতার আন্দোলন আরও জোরদার হয়।
অবশেষে ১৯৪৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটির নাম হয় Dominion of Ceylon এবং ডি. এস. সেনানায়েকে হন প্রথম প্রধানমন্ত্রী। যদিও তখনও ব্রিটিশ কমনওয়েলথের অন্তর্ভুক্ত ছিল দেশটি, তবু এটি ছিল শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রের প্রথম বিজয়।
শ্রীলংকার স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী
শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার ইতিহাস কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার নাম নয়, বরং অসংখ্য বিপ্লবীর ত্যাগ ও আত্মদানের ফসল।
অনাগরিক ধম্মপাল (1864–1933): তিনি বৌদ্ধ পুনর্জাগরণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে দেন। তাঁর প্রেরণায় সাধারণ মানুষ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সচেতন হয়।
পন্নাম্বালাম রামানাথন (1851–1930): একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও তামিল নেতা। তিনি ব্রিটিশ শাসনের সময় স্থানীয়দের ভোটাধিকার ও আইনি স্বীকৃতির জন্য লড়াই করেন।
ডি. এস. সেনানায়েকে (1884–1952): স্বাধীনতার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তাঁর রাজনৈতিক কৌশল, জমি সংস্কার ও কৃষিনির্ভর উন্নয়ন নীতি স্বাধীনতা আন্দোলনকে সফল করে তোলে।
এস. ডব্লিউ. আর. ডি. বন্দরানায়েকে (1899–1959): স্বাধীনতার পরবর্তী রাজনীতিতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালনকারী। তিনি পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হন এবং দেশকে নতুন পথে পরিচালিত করেন।
Lanka Sama Samaja Party (LSSP) ও Sinhala Maha Sabha – ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতার ভিত্তি গড়ে তুলেছিল।
C. W. W. Kannangara – শিক্ষা সংস্কার, রাজনৈতিক সংগঠন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন।
Ponnambalam Ramanathan – জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও সংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন।
শ্রমিক ও গ্রামীণ জনগণ – প্রায় অগণিত সাধারণ মানুষ যারা নানা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে আত্মত্যাগ করেছিলেন, তাদের অবদানও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
Aragalaya আন্দোলন (২০২২) – শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদত্যাগে জনগণ সফল, যা শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রের ধারাবাহিক শক্তি প্রদর্শন করে।
এঁদের প্রত্যেকের অবদানই শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছে। তাঁদের জীবনগাঁথা আজও শ্রীলঙ্কার জাতীয়তাবাদের মূল প্রেরণা।
স্বাধীনতার পর গণতন্ত্রের সূচনা
স্বাধীনতার পর শ্রীলঙ্কা ব্রিটিশ ধাঁচের সংসদীয় গণতন্ত্র গ্রহণ করে। জনগণ ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে শুরু করে। তখন United National Party (UNP) ও পরবর্তীতে Sri Lanka Freedom Party (SLFP) রাজনীতির মূল চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে।
প্রথমদিকে শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াচ্ছিল। নিয়মিত নির্বাচন, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সংসদীয় বিতর্ক গণতন্ত্রের অনুশীলনকে সমৃদ্ধ করছিল। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রকে তখন অনেক বেশি পরিণত বলে ধরা হতো।
গণতন্ত্রের হোঁচট: জাতিগত বৈষম্যের বীজ বপন
সমস্যা শুরু হয় জাতিগত বৈষম্য থেকে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলী জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ১৯৫৬ সালে প্রধানমন্ত্রী বন্দরানায়েকে “Sinhala Only Act” পাস করেন, যা সিংহলিকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। তামিল জনগোষ্ঠী এতে নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করে।
ভাষা–ভিত্তিক এই বৈষম্য ক্রমেই চাকরি, শিক্ষা ও সামাজিক জীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তামিলরা রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে যেতে থাকে। এতে করে অসন্তোষ বাড়তে থাকে এবং ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জন্ম হয়।
গৃহযুদ্ধের সূচনা
![]() |
শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধ |
১৯৭৬ সালে গঠিত হয় Liberation Tigers of Tamil Eelam (LTTE), যাদের লক্ষ্য ছিল উত্তর ও পূর্ব শ্রীলঙ্কায় স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র গঠন। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে তামিল ও সিংহলী দাঙ্গা শুরু হয়, যা ইতিহাসে Black July নামে পরিচিত। সেদিন হাজার হাজার তামিল নিহত হয় এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
এরপর শুরু হয় দীর্ঘ ২৬ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ।হাজারো মানুষের রক্তে শ্রীলঙ্কার মাটি রঞ্জিত হয়, রাজপথ কেঁপে ওঠে বোমা ও গুলির শব্দে। একদিকে ছিল সরকার ও সেনাবাহিনী, অন্যদিকে এলটিটিই।
গৃহযুদ্ধ শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রকে ভীষণভাবে দুর্বল করে দেয়। সেনাবাহিনীর আধিপত্য বাড়তে থাকে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিনত হয়।। সংসদীয় গণতন্ত্র টিকে থাকলেও যুদ্ধের কারণে এর প্রাণশক্তি অনেকটাই নি:শষ হয়।
শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী এক চূড়ান্ত অভিযানে এলটিটিইকে পরাজিত করে। এর নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ নিহত হন এবং এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় দীর্ঘ ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধ।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর দেশজুড়ে এক ধরনের স্বস্তি নেমে আসে। মানুষ নতুন করে শান্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তবে সেই শান্তির পথ সহজ ছিল না। পুনর্গঠন, বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার—সবই ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ।
এই সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শ্রীলঙ্কাকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনতে চাপ দেয়। দেশীয় সুশীল সমাজও সক্রিয় হয়। ধীরে ধীরে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাড়ে এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের উত্থান
গৃহযুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে শ্রীলঙ্কা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়:
সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত করা হয়, নির্বাহী, আইনসভা ও বিচার বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য আনা হয়।
স্বচ্ছ ভোট নিশ্চিত করতে কমিশনের হাতে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়।
বিচার বিভাগের শক্তি বৃদ্ধি করা হয়,। মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের সুরক্ষায় আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শুরু করে।
নাগরিক সংগঠন ও এনজিওগুলো জনগণকে সচেতন করতে এবং শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে সক্রিয় হয়।
এই প্রক্রিয়াগুলো শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্রকে ধীরে ধীরে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়।
শ্রীলঙ্কায় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রূপান্তরিত হওয়ার কৌশল
নিয়মিত নির্বাচন ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন – নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা – সরকারি, সামরিক ও রাজনৈতিক চাপ থেকে বিচারের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা।
নাগরিক সমাজ ও শিক্ষিত জনগণ – চার্চ, বৌদ্ধ সংঘ ও এনজিও-এর মাধ্যমে জনগণকে সচেতন রাখা।
বিদেশি শক্তির প্রভাব
শ্রীলঙ্কায় বিদেশে শক্তিসমূহ বিশেষ করে চীন এবং ভারতের প্রভাব অপরিসীম। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামাগত উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহ নানা ইস্যুতে বৈদেশিক শক্তির সাথে শ্রীলঙ্কাকে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হয়।
ভারতের প্রভাব
১৯৮৭ সালে ইন্দো–লঙ্কা অ্যাকর্ড শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে বড় বাঁক আনেছিল। ভারতের মধ্যস্থতায় শ্রীলঙ্কা উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে প্রাদেশিক কাউন্সিল গঠন করতে বাধ্য হয়।
ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী (IPKF) শ্রীলঙ্কায় যায়, যা গণতন্ত্র রক্ষা ও বিদ্রোহ দমন – দুটোতেই প্রভাব ফেলেছিল।
চীনের প্রভাব
চীন উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিশেষত হাম্বানটোটায় বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে চীন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে।
এটি দেখায় যে ছোট একটি দেশ হলেও শ্রীলঙ্কা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে তাকে আন্তর্জাতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
বর্তমান শ্রীলঙ্কা: চ্যালেঞ্জ ও আশা
যদিও আজ শ্রীলঙ্কা গণতন্ত্রের পথে অনেক দূর এগিয়েছে, তবুও চ্যালেঞ্জ কম নয়। রাজনৈতিক দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট, ঋণ নির্ভরতা এবং মাঝে মাঝে রাজনৈতিক অস্থিরতা গণতন্ত্রকে নাড়া দেয়। তবে জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা, শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা দেশটির গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
উপসংহার
শ্রীলঙ্কার ইতিহাস এক দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াই, বিপ্লবীদের আত্মদান, স্বাধীনতার পর গণতন্ত্রের সূচনা, হোঁচট খাওয়া জাতিগত বৈষম্য, গৃহযুদ্ধের বিভীষিকা এবং অবশেষে শান্তির সুবাতাসে ফিরে আসা—সবকিছু মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র আজকের অবস্থানে এসেছে।
এই কাহিনি আমাদের শেখায়—গণতন্ত্র কোনো সহজ অর্জন নয়। এটি রক্ষা করতে হয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, সচেতন নাগরিক, স্বাধীন প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে। শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা তাই দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্ববাসীর জন্য এক অমূল্য শিক্ষা।
Comments
Post a Comment