Posts

Showing posts from August, 2025

নবম পর্ব : আন্দ্রেস বোনিফাসিও: Katipunan-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ফিলিপিনসের স্বাধীনতার অগ্রদূত

কিছু মানুষ জন্মই ইয় কোন  জাতির স্বপ্নের প্রতীক  ।আন্দ্রেস বোনিফাসিও ছিলেন এমন একজন নেতা, যিনি সাধারণ মানুষকে সংগ্রামের মঞ্চে নিয়ে আসেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনকে শক্তিশালী করেন। তার সাহস, উদ্দীপনা ও দেশপ্রেম ফিলিপিনসের ইতিহাসে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। ✨ প্রিভিউ  আন্দ্রেস বোনিফাসিও (১৮۶৩–১৮৯৭) ছিলেন ফিলিপিনসের জাতীয় নায়ক এবং Katipunan আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সরাসরি স্প্যানিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন এবং সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাঁর  নেতৃত্ব ও নৈতিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে Katipunan আন্দোলন গণতান্ত্রিক মূলনীতির ভিত্তিতে সংগঠিত হয় এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম আরও শক্তিশালী হয়। 👶 শৈশব ও বেড়ে ওঠা  আন্দ্রেস বোনিফাসিও জন্মগ্রহণ করেন ৩০ নভেম্বর ১৮৬৩ সালে Tondo, Manila-তে। তার পরিবার সাধারণ এবং মধ্যবিত্ত হলেও খুবই কঠোর পরিশ্রমী। ছোটবেলায় তিনি স্কুলে পড়াশোনা করলেও অর্থনৈতিক কারণে শিক্ষার সুযোগ সীমিত ছিল। শৈশব থেকেই তিনি শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের কষ্ট লক্ষ্য করতেন। এটি তার নৈতিকতা ও সামাজিক সচেতনতার ভিত্তি তৈরি করে। পরে তিনি  শ্রমজী...

দশম পর্ব : আপোলিনারিও মাবিনি: বিপ্লবী, সংবিধানের রচয়িতা ও রাষ্ট্রচিন্তার পথপ্রদর্শক

ইতিহাসের পাতায় কিছু মানুষ আছেন, যাদের দেহ ভাঙে, কিন্তু মনোবল অটুট থাকে। ফিলিপাইনের বিপ্লবের মস্তিষ্ক—Apolinario Mabini—ছিলেন এমনই এক মানুষ। পক্ষাঘাতে জর্জরিত শরীর, অথচ তার চিন্তা ও কলম রাষ্ট্র ও স্বাধীনতার জন্য অদম্য শক্তি হয়ে ওঠে। তিনি প্রমাণ করেছিলেন, শারীরিক সীমাবদ্ধতা কখনো জাতির স্বপ্ন ও নেতৃত্বকে থামাতে পারে না। ✨ প্রিভিউ Apolinario Mabini (২৩ জুলাই ১৮৬৪ – ১৩ মে ১৯০৩) ছিলেন একজন আইনজীবী, দার্শনিক, রাষ্ট্রনেতা ও বিপ্লবী। তাকে বলা হয় “Brain of the Revolution”, কারণ Katipunan থেকে Emilio Aguinaldo পর্যন্ত সবাই তার বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শের উপর নির্ভর করতেন। তিনি ছিলেন Malolos Constitution-এর প্রধান রচয়িতা এবং ফিলিপাইনের স্বাধীনতা আন্দোলনের নৈতিক ও রাজনৈতিক কম্পাস। মার্কিন দখলের সময়েও তার দৃঢ় নৈতিকতা ও প্রজ্ঞা তাকে ইতিহাসের চিরস্থায়ী চরিত্রে পরিণত করেছে। 👶 শৈশব ও শিক্ষা Mabini জন্মগ্রহণ করেন ২৩ জুলাই ১৮৬৪ সালে, Batangas প্রদেশের Tanauan শহরে। দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম হলেও শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী ও অধ্যবসায়ী। তার বাবা চাষি ছিলেন এবং মা ধার্মিক ও শিক্ষানুরাগী। ছোটবেলা থেকেই ত...

একাদশ পর্ব : মারসেলো এইচ. দেল পিলার: সংস্কার আন্দোলনের অগ্রদূত ও ফিলিপিনো সাংবাদিকতার পথিকৃত

ইতিহাসের পাতায় কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা কলমের মাধ্যমে বিপ্লব ঘটান। মারসেলো এইচ. দেল পিলার ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি সাংবাদিকতা ও প্রকাশনার মাধ্যমে স্প্যানিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে চেতনা সৃষ্টি করেন। তার লেখা, প্রচারণা ও সংস্কারবাদী চিন্তা ফিলিপিনো জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা ও ঐক্যের বীজ বপন করেছিল। ✨ প্রিভিউ  মারসেলো এইচ. দেল পিলার (১৮৫০–১৮৯৬) ছিলেন ফিলিপিনো সাংবাদিক, লেখক এবং Propaganda Movement-এর অগ্রদূত। তিনি ফিলিপিনো সংস্কারবাদীদের নেতৃত্বে স্প্যানিশ শাসনের বিরুদ্ধে লিখতেন এবং প্রচার চালাতেন। তাঁর কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষিত নাগরিকরা স্প্যানিশ শাসনের অচলতা, অবিচার এবং দারিদ্র্যের কারণে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রয়োজন বুঝতে শুরু করে। 👶 শৈশব ও শিক্ষা  মারসেলো এইচ. দেল পিলার  ৩০ আগস্ট ১৮৫০ সালে জন্মগ্রহণ  করেন,  Bulacan প্রদেশে। তার পরিবার মধ্যবিত্ত হলেও শিক্ষার প্রতি তারা গুরুত্ব দিত। Del Pilar ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা ও সামাজিক সমস্যার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা তিনি স্থানীয় স্কুলে গ্রহণ করেন। পরে Colegio de San José থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন...

দ্বাদশ পর্ব : সুলতান কুদরাত :মগুন্ডানাওর নেতা ও স্প্যানিশ বিরোধী প্রতিরোধের প্রতীক

Image
মিন্দানাও দ্বীপপুঞ্জ, ফিলিপাইন  ইতিহাসে এমন কিছু নেতা আছেন, যাদের সাহস ও কৌশল ইতিহাসকে নতুন দিশা দেখায়। মগুন্ডানাওর সুলতান জনাব সুলতান কুদরত  ছিলেন সেই জাতির নায়ক, যিনি স্প্যানিশ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে অবিচল প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন। তার নেতৃত্বের মন্ত্র ছিল—“স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা বাধ্যতামূলক।” ✨ প্রিভিউ Sultan Muhammad Dipatuan Kudarat (১৭৯৫–১৬৮৫) ছিলেন মগুন্ডানাওর সুলতান এবং স্প্যানিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি কেবল একজন রাজনীতিবিদ বা যোদ্ধা ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক জাতির প্রতিরোধের প্রতীক। Kudarat-এর নেতৃত্বে মগুন্ডানাওর মানুষদের ঐক্য ও আত্মসম্মান দৃঢ় হয়। আজও তিনি ফিলিপাইনের ইতিহাসে জাতীয় নায়ক হিসেবে বিবেচিত। 👶 শৈশব ও বেড়ে ওঠা সুলতান কুদরত  জন্মগ্রহণ করেন ১৭৯৫ সালে মগুন্ডানাও অঞ্চলে। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন কৌশলী ও বিচক্ষণ। তার পরিবার সুলতানি শাসক পরিবার হলেও তিনি সাধারণ জনগণের সঙ্গে সময় কাটাতেন এবং স্থানীয় রাজনীতি ও সামাজিক কাঠামো বোঝার চেষ্টা করতেন। সুলতান  প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতেন ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। তিনি কোর...

পঞ্চম পর্ব : আকুইনো পরিবার: ফিলিপাইনের গণতন্ত্রের প্রতীক

Image
প্রারম্ভিকা ফিলিপাইনসের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নাম যা চিরকাল স্মরণীয় এবং অনুপ্রেরণামূলক – তা হল আকুইনো পরিবার। তিন প্রজন্ম ধরে এই পরিবার ফিলিপাইনের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে।ফিলিপাইনের ইতিহাসে অ্যাকুইনো পরিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং জনসেবার আদর্শে অনুপ্রাণিত এই পরিবারের সদস্যরা বারবার নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য এই পোস্টে আমরা  আকুইনো পরিবারের তিন দেশপ্রেমিক এবং গণতন্ত্রের পূজারী কে নিয়ে আলোকপাত করব, তাদের  জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক, দেশ গঠনে,গনতন্ত্র শক্তিশালী করণ- পুনরুদ্ধার, রাজনৈতিক  ও সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য  অবদানের কথা , এবং আলোচনা করব কিভাবে তাদের সংগ্রাম ফিলিপাইনের জনগণকে নতুন আলোর দিশা  দেখিয়েছে। আমরা দেখব, কিভাবে নিনয় আকুইনো একজন বিপ্লবী নেতা হিসেবে আত্মত্যাগ করেছেন, কিভাবে করাজন আকুইনো গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, এবং কিভাবে তাদের সন্তান বিনিগনো আকুইনো তৃতীয় আধুনিক ফিলিপাইনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১. নিনয় আকুইনো: জন্ম, শৈশব,পড়াশোনা এবং বিয়ে...

অষ্টম পর্ব : ফিলিপাইনের নারী বিপ্লবীরা: সাহস, নেতৃত্ব ও স্বাধীনতার গল্প

Image
পাঠকের প্রতি প্রশ্ন  আপনি কি মনে করেন, একজন নারী কি সমাজ ও ইতিহাসের মূলধারায় নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধ জিততে পারে? ভূমিকা ইতিহাসের পাতা উল্টালে বিপ্লব মানেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে—যুদ্ধক্ষেত্রে তরবারি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ সৈনিক, পতাকা উড়িয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া নেতা, কিংবা স্বাধীনতার পর সংবিধান রচনার প্রজ্ঞাময় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এর আড়ালে বহু কণ্ঠস্বর থেকে যায়, যেগুলো উচ্চারিত হয় না পাঠ্যবইয়ের পাতায় কিংবা রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্মরণে। সেই কণ্ঠস্বরগুলোর ভেতরে সবচেয়ে তীব্র, সবচেয়ে অগ্নিময় ছিল নারীদের কণ্ঠস্বর। ফিলিপাইনের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি সেই নারীদের নাম আমরা না উচ্চারণ করি—যাঁরা নীরবতার নিরাপদ পথ বেছে নেননি, বরং দুঃসাহসী কণ্ঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন; যাঁরা পতাকা সেলাই করেছিলেন যখন স্বাধীনতার স্বপ্ন বলা নিষিদ্ধ ছিল; যাঁরা আহত যোদ্ধার সেবা করেছিলেন মাতৃস্নেহে; আবার যাঁরা সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁরা ছিলেন বিপ্লবের অগ্নিশিখা—যাঁদের আলোয় জাতির আত্মা প্রজ্বলিত হয়েছে। উপনিবেশিক শাসনের পটভূমি ও নারীর ...

চতুর্থ পর্ব : এমিলিও আগুইনালদো: ফিলিপাইনের প্রথম প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতার ঘোষক।

Image
এমিলিও আগুইনালদো,ফিলিপাইনের স্বাধীনতার ঘোষক  সাবটাইটেল স্পেন ও আমেরিকার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যিনি ফিলিপাইনের স্বাধীন প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেছিলেন। পাঠকের প্রতি প্রশ্ন ; আপনি কি মনে করেন, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে নেতৃত্ব দেওয়া আর ক্ষমতায় টিকে থাকা – এই দুইয়ের মধ্যে কোনটা বেশি কঠিন? ভূমিকা ফিলিপাইনের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অনন্য ও বিতর্কিত নাম হলো এমিলিও আগুইনালদো (1869–1964)। তিনি ছিলেন বিপ্লবী, সামরিক নেতা এবং ফিলিপাইনের প্রথম প্রেসিডেন্ট। মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন—যা এশিয়ার প্রথম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু তার জীবন কেবল গৌরবের গল্প নয়, বরং দ্বন্দ্ব, বিতর্ক ও সমালোচনার সমষ্টি। তিনি যেমন স্পেনীয় ঔপনিবেশিক শাসন ভেঙে দিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন এক কঠিন বাস্তবতার। প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা জন্ম ও পরিবার জন্ম: ২২ মার্চ, ১৮৬৯ জন্মস্থান: কাওইতে প্রদেশের কাওইতে এল ভিয়েজো (বর্তমানে কাওইতে শহর) পরিবার: ধনী জমিদার পরিবার শিক্ষা স্থানীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আইন ...

তৃতীয় পর্ব : আন্দ্রেস বনিফাসিও: ফিলিপাইনের বিপ্লবের জনক

Image
আন্দ্রেস বনিফাসিও, ফিলিপাইনের স্বাধীনতার জনক  "কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ছিল না, কিন্তু ছিল এক অদম্য স্বপ্ন—স্বাধীন ফিলিপাইন!"  ইতিহাস ভুলে গেছে তাকে, কিন্তু সাধারণ মানুষ তাকে মনে রেখেছে ‘বিপ্লবের জনক’ হিসেবে। 👁‍🗨 প্রিভিউ : আন্দ্রেস বনিফাসিও—একজন দরিদ্র অনাথ, যিনি বই পড়ে নিজেকে গড়েছিলেন, এবং হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন জাতির মুক্তির জন্য। তিনি ছিলেন Katipunan আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, যেখান থেকে শুরু হয় ফিলিপাইনের স্বাধীনতা সংগ্রাম। এই লেখায় জানুন: 📌 কেমন ছিল বনিফাসিওর শৈশব ও সংগ্রাম 📌 Katipunan গঠনের পেছনের কাহিনি 📌 কেন তাকে “বিপ্লবের জনক” বলা হয় 📌 তার মৃত্যুর রহস্য এবং বিতর্ক 📌 আজকের পৃথিবীতে তার আদর্শ কতটা প্রাসঙ্গিক 🎯 এই গল্প শুধু অতীতের নয়, এটা প্রমাণ—একজন সাধারণ মানুষও ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে। পাঠকের প্রতি প্রশ্ন : আপনি কি মনে করেন, একজন সাধারণ মানুষও কি ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে? ভূমিকা যেখানে উপনিবেশিক শাসন মানুষের জীবনকে অমানবিক করে তোলে, সেখানে কিছু মানুষ উঠে আসে অন্ধকার ভেদ করে আলো ছড়াতে। ফিলিপাইনের ইতিহাসে এমনই এক মহামানব ছিলেন আন্দ্রেস বনিফাস...

ষষ্ঠ পর্ব : ডা. পিও ভ্যালেনজুয়েলা: চিকিৎসক, বিপ্লবী ও জাতির কান্ডারী

Image
 সস্ত্রীক ডা. পিও ভ্যালেনজুয়েলা “জাতির স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করা মানুষদের মধ্যে কেউ ছিলেন অগ্নিশিখার মতো, আবার কেউ ছিলেন প্রদীপের মতো। ডা. পিও ভ্যালেনজুয়েলা ছিলেন সেই প্রদীপ, যিনি নিজের আলোয় চারপাশকে আলোকিত করেছেন।” 📌 প্রিভিউ ডা. পিও ভ্যালেনজুয়েলা ছিলেন ফিলিপাইনের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অগ্রগণ্য বিপ্লবী, চিকিৎসক এবং রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু হোসে রিজেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই নয়, কাতিপুনান সংগঠনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবেও ইতিহাসে অমর। এই ব্লগ পোস্টে আমরা তাঁর জন্ম, শিক্ষা, বিপ্লবী কর্মকাণ্ড, হোসে রিজেলের সঙ্গে সম্পর্ক, রাজনৈতিক জীবন ও উত্তরাধিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 👶 জন্ম ও শৈশব ডা. পিও ভ্যালেনজুয়েলা ১৮৬৯ সালের ১১ জুলাই ফিলিপাইনের বুলাকান প্রদেশের পোলো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ণ নাম ছিল Pío Valenzuela y Alejandrino। তাঁর পরিবার ছিল শিক্ষিত ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত। পিতা ফ্রান্সিসকো ভ্যালেনজুয়েলা ছিলেন পৌর প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত, আর মাতা লরেঞ্জানা আলেজান্দ্রিনো ছিলেন অভিজাত পরিবারের সন্তান। শৈশবেই তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম ও মানবসেবার বীজ বপন হয়েছিল। গ্রামের সাধারণ মানুষ...

দ্বিতীয় পর্ব : হোসে রিজাল: ফিলিপাইনের জাতীয় বীর ও স্বাধীনতা সংগ্রামী

Image
হোসে রিজেল, ফিলিপাইনের স্বাধীনতা সংগ্রামী, বীর  সাবটাইটেল একজন চিকিৎসক, লেখক ও শহীদের জীবনী যিনি তাঁর কলমের শক্তিতে একটি জাতিকে স্বাধীনতার পথে উজ্জীবিত করেছিলেন। Reader’s Question আপনি কি বিশ্বাস করেন, শুধু একটি কলমের শক্তি কোনো জাতিকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিতে পারে? ভূমিকা ফিলিপাইনের স্বাধীনতার ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অম্লান থাকবে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র নিঃসন্দেহে হোসে রিজাল (José Protacio Rizal Mercado y Alonzo Realonda)। তিনি ছিলেন চিকিৎসক, কবি, ঔপন্যাসিক, শিল্পী, এবং সর্বোপরি একজন দেশপ্রেমিক যিনি অস্ত্র নয়, কলমকে বেছে নিয়েছিলেন সংগ্রামের হাতিয়ার হিসেবে। তাঁর লেখা Noli Me Tangere ও El Filibusterismo ফিলিপাইনের মানুষের মনে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিল। যদিও তিনি সরাসরি সশস্ত্র বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তাঁর চিন্তা, দর্শন ও আত্মত্যাগই পরবর্তীতে ফিলিপাইন বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করে। প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা জন্ম ও পরিবার হোসে রিজাল জন্মগ্রহণ করেন ১৯ জুন, ১৮৬১ সালে, ফিলিপাইনের ল্যাগুনা প্রদেশের কালাম্বায় এক সমৃদ্ধ ও শিক্ষিত পরিবারে। তার ...

তৃতীয় পর্ব : সুকর্ণো: ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার পিতা – এক বিপ্লবী নেতা ও রাষ্ট্রনায়ক

Image
ইন্দোনেশিয়ার সাবেক সুকর্ণো জাভা দ্বীপের সবুজ পাথুরে পাহাড়ের মধ্যে, সমুদ্রের ঢেউয়ের ধ্বনিতে এক তরুণের কণ্ঠ যেন ভবিষ্যতের ডাক দিচ্ছিল। চোখে দীপ্তি, মননে দেশপ্রেম—এই মানুষটি একদিন হয়ে উঠবেন ইন্দোনেশিয়ার জাতির পিতা। তিনি ছিলেন সুকর্ণো, যিনি একটি স্বাধীন, ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী ইন্দোনেশিয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রিভিউ সুকর্ণো ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার সংগ্রামী নেতা এবং দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ছিলেন এক প্রখর চিন্তাবিদ, যিনি ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের কল্যাণ এবং জাতীয় ঐক্যের জন্য রাজনীতি করতেন। ডাচ ঔপনিবেশিক শাসন ভেঙে স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার জন্য তার নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতা তাকে এশিয়ার ইতিহাসের এক অমর ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। শৈশব ও পারিবারিক জীবন কিশোর সুকর্নো সুকর্ণো জন্মগ্রহণ করেন ১৯০১ সালের ৬ জুন, জাভার ছোট গ্রামে। তার পিতা একজন ডাচ ও জাভা সংস্কৃতির সংমিশ্রণে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন, আর মাতা ছিলেন জাভানিজ মুসলিম পরিবারের সন্তান। ছোটবেলায় সুকর্ণো খুবই জ্ঞানপ্রিয়, চঞ্চল এবং কৌতূহলী। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সময় থেকেই তার নেতৃত্বগুণ প্রকটভাবে প্রকাশ পায...

মিশরের গণতন্ত্রের অপূর্ণ যাত্রা: কেন তা স্থায়ী হলো না?

Image
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি          কায়রোর তহরির স্কোয়ার—যেখানে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ একসাথে উচ্চারণ করেছিল তিনটি শব্দ—“রুটি, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার।” মনে হয়েছিল শতাব্দীর পুরনো স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। আরব বসন্ত যেন মিশরের ইতিহাসে নতুন ভোরের সূচনা করেছিল। কিন্তু ইতিহাস বড়ই নির্মম। ভোরের আলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল গহীন  অন্ধকারে। সামরিক বাহিনীর বুটের শব্দ আবার ফিরে এলো, আর গণতন্ত্র রয়ে গেল কেবল স্মৃতির পাতায়। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব— 1. মিশরে গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। 2. আরব বসন্ত এবং মিশরের গণতান্ত্রিক উত্তরণ। 3. কেন মিশরে গণতন্ত্র স্থায়ী হয়নি—সামরিক আধিপত্য, রাজনৈতিক বিভাজন, নাগরিক সমাজের দুর্বলতা, অর্থনৈতিক সংকট, এবং আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির প্রভাব। 4. তুলনায় ইন্দোনেশিয়ার সাফল্য: কীভাবে তারা সংকট থেকে বেরিয়ে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। 5. উপসংহার: মিশরের অভিজ্ঞতা আমাদের কী শিক্ষা দেয় 🇮🇩🇮🇩 ১. মিশরের গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মিশর একসময় সভ্যতার আঁতুরঘর ছিল। নীলনদের তীরে গড়ে ওঠা সমাজ বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাষ্...