স্বৈরশাসনের ছায়া থেকে আলোর পথে

 📘 পর্ব ২

বিশ্বে স্বৈরশাসক পতনের পর রাষ্ট্র পুনর্গঠন: ইতিহাস কী বলে?

“যেখানে স্বৈরতন্ত্র ভেঙেছে, সেখানে কি সবকিছু বদলেছে? না কি শুধুই বদলেছে নেতৃত্বের নাম ও মুখ?”

🟦 পাঠকের প্রশ্ন:

বিশ্বজুড়ে যেসব দেশে স্বৈরাচার পতন হয়েছে, তারা কীভাবে নিজেকে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠন করেছে? আর আমরা কেন সেখান থেকে শিক্ষা নিতে পারছি না।

 ভূমিকা: 

এক ব্যক্তির পতন, এক রাষ্ট্রের পুনর্জন্ম?

স্বৈরশাসকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই আশা করেন, রাষ্ট্র বদলে যাবে। নতুন রাষ্ট্র, নতুন শাসন, নতুন মূল্যবোধ। কিন্তু বাস্তবতা হলো—কোনো জাতির সংস্কার তখনই সফল হয়, যখন সেটি শুধু ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ঘটায়।

এই পর্বে আমরা দেখব বিশ্বের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র কীভাবে স্বৈরাচারের পতনের পরে নিজেদের গড়ে তুলেছে—কারা সফল, কারা ব্যর্থ, আর কেন?

১. দক্ষিণ আফ্রিকা: 

ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে মাফ নয়, পুনর্মিলন

দীর্ঘ সময় ধরে বর্ণবাদের (Apartheid) শিকার দক্ষিণ আফ্রিকা এক সময় ছিল বিশ্বের অন্যতম বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্র। ১৯৯০-এর দশকে নেলসন ম্যান্ডেলা রাজনৈতিক বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে নেতৃত্ব দেন এক ঐতিহাসিক গঠন প্রক্রিয়ায়।

🔹 প্রধান অর্জন:

Truth and Reconciliation Commission (TRC)

সংবিধান পরিবর্তন

অন্তর্ভূক্তিমূলক নেতৃত্ব  দান

🔹 শিক্ষা:

অপরাধ না লুকিয়ে, স্বীকার করে জাতিগত মিলনের পথে যাওয়া যায়।

ক্ষমা ও বিচার একসাথে চলতে পারে।

২. ইন্দোনেশিয়া: 

সুহার্তোর পতনের পর গণতন্ত্রের সংগ্রাম

জেনারেল সুহার্তো ৩২ বছর ধরে স্বৈরশাসন চালান। ১৯৯৮ সালে অর্থনৈতিক সংকট, ছাত্র বিক্ষোভ ও সামরিক চাপে তিনি পদত্যাগ করেন।

🔹 তার পরবর্তী পরিবর্তন:

বহু দলীয় গণতন্ত্রে উত্তরণ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি ভোট চালু

মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা

🔹 শিক্ষা:

রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে সাংবিধানিক সংস্কার জরুরি।

শিক্ষিত তরুণ সমাজ সবচেয়ে বড় নিয়ামক।

৩. চিলি:

 পিনোচেটের বিদায় ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা

জেনারেল আগস্টো পিনোচেট ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চিলি শাসন করেন। তার পতন ঘটে ১৯৮৮ সালের গণভোটে, যেখানে জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করে।

🔹 ফলাফল:

ধাপে ধাপে গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া

Truth commissions ও বিচার

প্রেস ও শিক্ষার স্বাধীনতা বৃদ্ধি

🔹 শিক্ষা:

বিপ্লব নয়, প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর দীর্ঘস্থায়ী হয়।

গণভোটই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ অস্ত্র হতে পারে।

৪. রোমানিয়া ও পূর্ব ইউরোপ:

 এক রাতে ধসে পড়ে শক্তিশালী শাসন

১৯৮৯ সালে নিকোলাই চওসেস্কু-র পতনের মধ্য দিয়ে রোমানিয়া একটি ভয়ংকর স্বৈরশাসনের অবসান ঘটায়। একই সময় পোল্যান্ড, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি—সব দেশেই পতন ঘটে সমাজতান্ত্রিক একনায়ক শাসনের।

🔹 পরিবর্তন:

গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন

পূর্ব–পশ্চিম মিশ্র উন্নয়ন মডেল

ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তি

🔹 শিক্ষা:

সাংবিধানিক পুনর্গঠন, আন্তর্জাতিক সহায়তা ও ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি বদলের মূল উপাদান।

৫. আরব বসন্ত: 

প্রত্যাশার বিপরীতে দুঃস্বপ্ন

২০১১ সাল, তিউনিশিয়ায় এক ফল বিক্রেতার আত্মাহুতির মাধ্যমে শুরু হয় আরব বসন্ত। এরপর মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন—সব দেশে গণঅভ্যুত্থান হয়। কিন্তু ফলাফল কি ছিল?

🔸 মিশর: 

মোবারকের পতনের পর সেনা শাসনের পুনরাবৃত্তি

হোসনি মোবারকের পতনের পর প্রথমবার গণভোট ও মোর্সি নির্বাচিত হন

সেনাবাহিনী মোর্সিকে সরিয়ে দেয়, সিসি রাষ্ট্রপতি হন

গণতন্ত্র ব্যর্থ, পুনরায় স্বৈরতন্ত্র

👉 পাঠ: সেনাবাহিনী যদি প্রভাবশালী থাকে, গণতন্ত্র দীর্ঘস্থায়ী হয় না

🔸 লিবিয়া: 

গাদ্দাফির পতন, কিন্তু গৃহযুদ্ধ অনিবার্য

ন্যাটোর সহায়তায় গাদ্দাফির পতন

কোন কেন্দ্রীয় সরকার গঠন হয়নি

নানা মিলিশিয়া, বিদেশি হস্তক্ষেপ

👉 পাঠ: পতন নয়, পরিকল্পিত গঠন প্রক্রিয়া জরুরি

🔸 সিরিয়া: 

আসাদের রক্তক্ষয়ী টিকে থাকা

বিক্ষোভ শুরু, আসাদের দমন

রাশিয়ার সহায়তায় শাসন টিকে আছে

লাখো প্রাণহানি, জাতিগত বিভাজন

👉 পাঠ: আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও গৃহবিভাজন রাষ্ট্র গঠনে বড় বাধা

🔸 তিউনিশিয়া: 

একমাত্র আপাত সাফল্য

শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন

নব সংবিধান, গণতান্ত্রিক নির্বাচন

তবে সাম্প্রতিক সময়ে গণতন্ত্র হুমকির মুখে

👉 পাঠ: নেতৃত্ব, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক ইচ্ছাই সফলতার মূল

🔸ইয়েমেন :

স্বপ্নের বদলে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ

প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহের দীর্ঘদিনের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়

সালেহ ক্ষমতা ছাড়লেও রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়

হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী দখল করে নেয়

সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট হস্তক্ষেপ করে, শুরু হয় ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ

👉 পাঠ: রাজনৈতিক শূন্যতা ও বিভক্ত সমাজ গণআন্দোলনকে গৃহযুদ্ধে পরিণত করতে পারে

🔸 বাংলাদেশ:

গণআন্দোলনে এরশাদ পতন, কিন্তু গণতন্ত্র কি পূর্ণতা পেল?

১৯৮২ সালে সেনাপ্রধান হিসেবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন

ছাত্র, শ্রমিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর সম্মিলিত আন্দোলনে ১৯৯০ সালে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন

১৯৯১ সালে নির্বাচন ও সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়

তবে দলীয় কোন্দল, নির্বাচনপদ্ধতির দুর্বলতা, ও সামরিক প্রভাব পুরোপুরি নির্মূল হয়নি

👉 পাঠ: গণআন্দোলন স্বৈরাচার পতনের পথ খুলে দিলেও, টেকসই গণতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার অপরিহার্য

সুদান (২০১9):

আল-বাসিরের পতন, গণতন্ত্রের আশা আবার সেনা হস্তক্ষেপে ধাক্কা

৩০ বছরের শাসক ওমর আল-বাসিরের বিরুদ্ধে বিশাল গণআন্দোলন

২০১৯ সালে তিনি সেনাবাহিনীর দ্বারা ক্ষমতা থেকে সরানো হয়

একটি বেসামরিক-সামরিক যৌথ সরকার গঠিত হয়

২০২1 সালে সেনাবাহিনী আবার ক্ষমতা দখল করে

👉 পাঠ: সেনাবাহিনীকে সত্যিকারভাবে রাজনীতি থেকে পৃথক না করলে গণতন্ত্র ঝুঁকিতে থাকে

🔸 জিম্বাবুয়ে (২০১৭):

মুগাবের পতন, কিন্তু পূর্বের ছায়া থেকে বের হতে ব্যর্থ

রবার্ট মুগাবে প্রায় ৩৭ বছর জিম্বাবুয়ের শাসক ছিলেন

সেনাবাহিনী ‘অভ্যুত্থান নয়’ বলে ক্ষমতা গ্রহণ করে, মুগাবে পদত্যাগে বাধ্য হন

এমারসন ম্নানগাগওয়া ক্ষমতায় আসেন, কিন্তু বহু পুরনো পদ্ধতি ও রাজনৈতিক নিপীড়ন অব্যাহত

👉 পাঠ: ক্ষমতার পালাবদল মানেই কাঠামোগত পরিবর্তন নয়

🔸 বুরকিনা ফাসো (২০১৪ ও ২০২2):

কম্পাউরির পতন, এরপর ঘন ঘন সেনা অভ্যুত্থান

প্রেসিডেন্ট ব্লেইস কম্পাউরে ২৭ বছর ক্ষমতায় ছিলেন

২০১৪ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করলে গণআন্দোলনে পদত্যাগ করেন

কিন্তু পরবর্তী সময়ে বারবার সেনা অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত

👉 পাঠ: ক্ষমতা বদলের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি, না হলে পরিস্থিতি বারবার পেছনে ফিরে যায়

🔸 মালি (২০১২, ২০২0, ২০২1):

গণআন্দোলন ও বারবার সেনা হস্তক্ষেপে অস্থিরতা

২০১২ সালে সামরিক অভ্যুত্থান, পরে জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান

২০২০ ও ২০২১ সালে আবার অভ্যুত্থান—সেনাবাহিনীই দেশের নিয়ন্ত্রণে

👉 পাঠ: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শুধুমাত্র স্বৈরাচার পতন নয়, নিরাপত্তা, আইনের শাসন ও রাজনৈতিক ঐক্য প্রয়োজন

🔸 গাম্বিয়া (২০১৬):

শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের এক বিরল উদাহরণ

দীর্ঘ ২২ বছরের স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া জামেহ নির্বাচনে হেরে প্রথমে ফল মেনে না নিলেও আন্তর্জাতিক চাপ ও প্রতিবেশীদের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ত্যাগ করেন

আদামা ব্যারো গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসেন

👉 পাঠ: শক্তিশালী আঞ্চলিক কূটনীতি ও অভ্যন্তরীণ সচেতনতা গণতন্ত্রের পথ মসৃণ করতে পারে

🔸 পাকিস্তান (পারভেজ মোশাররফের পতন):

সামরিক স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে, আবার হুমকি অব্যাহত

১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে পারভেজ মোশাররফ প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাসন শুরু করেন

২০০৭ সালে বিচারপতিদের অপসারণ ও জরুরি অবস্থা জারির কারণে ব্যাপক আন্দোলন হয়

২০০৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আসে, মোশাররফ পদত্যাগ করেন

কিন্তু সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাব ও বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ রয়ে যায়

👉 পাঠ: বাহ্যিক গণতন্ত্র থাকলেও সেনাবাহিনীর ছায়া রাজনীতিকে মুক্তি দেয় না

🔸 আইভরি কোস্ট (কোট দিভোয়ার, ২০১০–২০১১):


নির্বাচনের পর গৃহযুদ্ধ, এরপর গণতন্ত্রের পুনরায় প্রতিষ্ঠা

২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়; আলাসানে ওয়াতারা জয়ী হন

তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লরা গবাগবো ফল মেনে না নিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেন

শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, জাতিসংঘ ও ফরাসি হস্তক্ষেপে গবাগবোকে সরানো হয়

তারপর থেকে দেশটিতে আপাত গণতন্ত্র, তবে নতুন নেতৃত্ব নিয়েও বিতর্ক আছে

👉 পাঠ: নির্বাচনের বৈধতা অস্বীকার দেশকে সহিংস সংঘাতে ঠেলে দিতে পারে

🔸 কিরগিজস্তান:


দুইবার স্বৈরাচার পতন → বারবার বিপ্লব, কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অধরা

২০০৫: "টিউলিপ বিপ্লব" → প্রেসিডেন্ট আসকার আকায়েভ পদত্যাগ

২০১০: দ্বিতীয় বিপ্লব → বাকিয়েভ ক্ষমতাচ্যুত

২০২0: নির্বাচনী সহিংসতায় ফের প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ

👉 পাঠ: গণআন্দোলনের পুনরাবৃত্তি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক সংস্কারের অভাবের প্রতিফলন

🔸 আর্মেনিয়া (২০১৮):

শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন → দুর্নীতিবিরোধী বিপ্লব

"ভেলভেট রেভোলিউশন" নামে পরিচিত

জনগণের চাপ ও বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী সার্জ সারগসিয়ান পদত্যাগ

নতুন নেতৃত্ব (নিকোল পাশিনিয়ান) নির্বাচন ও সংস্কার চালু করে

👉 পাঠ: অহিংস ও সংগঠিত জনমত কাঠামোগত পরিবর্তনের পথ তৈরি করতে পারে

🔸 ইথিওপিয়া (২০১৮):

শাসকের পদত্যাগ → আশাবাদী পরিবর্তন → পরে সংঘাত

হায়লে মারিয়াম দেশালেন পদত্যাগ করেন

আবি আহমেদের আগমন: শান্তি চুক্তি, সংস্কার, নোবেল শান্তি পুরস্কার

পরে টাইগ্রে অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ শুরু → মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

👉 পাঠ: রাজনৈতিক খোলস পাল্টালেও জাতিগত বিভাজন এবং ক্ষমতার ভারসাম্য না থাকলে সংকট ফিরে আসে

🔸 মায়ানমার (২০২১):

গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাধা, সামরিক অভ্যুত্থান ও নিপীড়ন

২০১5 সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয়, অং সান সুচি নেতৃত্বে আসেন

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে আবার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে

আন্দোলন, দমন-পীড়ন, ও হাজারো প্রাণহানির ঘটনা ঘটে

👉 পাঠ: সেনাবাহিনীকে সংবিধানিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে, গণতন্ত্র অনিরাপদ

🔸 চাদ (২০২1):

প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দিবি যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার ছেলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতা দখল করেন

সামরিক কাউন্সিল গঠন করে নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা কার্যকর হয়নি

👉 পাঠ: উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা গ্রহণ গণতন্ত্রের মুখোশ হতে পারে

৬. রাষ্ট্র পুনর্গঠনের মৌলিক পাঠ :

✔️ ১. সত্য ও পুনর্মিলন

– অপরাধের বিচার না হলে আস্থা ফিরে আসে না

✔️ ২. সংবিধান ও আইন সংস্কার

– পুরোনো কাঠামোয় নতুন রাষ্ট্র চলে না

✔️ ৩. সুশীল সমাজ ও তরুণদের সম্পৃক্ততা

– কেবল রাজনৈতিক দল যথেষ্ট নয়

✔️ ৪. বাহিনীর নিরপেক্ষতা

– সেনাবাহিনী ও প্রশাসন দলনিরপেক্ষ না হলে ব্যর্থতা অনিবার্য

✔️ ৫. আন্তর্জাতিক সহায়তা ও সংহতি

– নিরপেক্ষ সাহায্য রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখে

🔚 উপসংহার:

“স্বৈরাচার পতন মানেই মুক্তি নয়, যদি আমরা জানি না আমরা কোথায় যাচ্ছি। ইতিহাস বলছে, যে জাতি তার ভবিষ্যতের ছক নিজে আঁকে, কেবল সেই জাতিই প্রকৃত পরিবর্তন ঘটাতে পারে।”

দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া বা তিউনিশিয়ার মতো উদাহরণ যেমন আশার কথা বলে, তেমনি মিশর, লিবিয়া বা সিরিয়ার অভিজ্ঞতা সতর্ক করে দেয়—পরিকল্পনা ছাড়া পরিবর্তন বিপর্যয় ডেকে আনে।




Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণের নতুন অধ্যায় – জাতিসংঘ অফিসের প্রস্তাব কী নির্দেশ করে।

পিআর চালুর বাস্তব রোডম্যাপ: বাংলাদেশে পরবর্তী ৫ বছরে কীভাবে শুরু করা সম্ভব?”

জুলাই ঘোষণাপত্র: একটি জাতির সংকল্প ও বৈশ্বিক অনুরণন